সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার দাবিতে আগামীকাল রাজপথে নামছে এইচএসসি-২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা
সদ্য প্রকাশিত এইচএসসি-২০২৫ পরীক্ষার ফলাফলে নজিরবিহীন বিপর্যয়ের পর ‘সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা’ চালুর দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পরিচালিত সাম্প্রতিক এক অনলাইন জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৯০ শতাংশ পরীক্ষার্থী অবিলম্বে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন। এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল, ২০ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার), দেশজুড়ে বড় ধরনের আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ‘এইচএসসি-২৫ ব্যাচের অকৃতকার্য ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা’।
জরিপের ফলাফল ও শিক্ষার্থীদের দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে পরিচালিত এই জরিপে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের একটি বিশাল অংশ মনে করেন, ফলাফল বিপর্যয়ের কারণে তাদের শিক্ষাজীবন থেকে একটি বছর নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জরিপের তথ্যমতে:
প্রায় ৯০% শিক্ষার্থী মনে করেন, যারা অল্প কিছু বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন, তাদের জন্য অবিলম্বে সাপ্লিমেন্টারি বা মানোন্নয়ন পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের (Board Challenge) বর্তমান পদ্ধতি যথেষ্ট স্বচ্ছ নয়। তাই তারা খাতা পুনঃমূল্যায়নের (Re-evaluation) দাবিও জানিয়েছেন।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট গত ১৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫৮.৮৩ শতাংশ, যা গত ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এই ফলাফল বিপর্যয়ের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তাদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জন্য দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার আয়োজন করা।
২. বোর্ড চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্রে কেবল নম্বর যোগ-বিয়োগ নয়, বরং খাতার পূর্ণাঙ্গ পুনঃমূল্যায়ন করা।
৩. নম্বরপত্রে এমসিকিউ (MCQ) ও সিকিউ (CQ) অংশের আলাদা নম্বর প্রদর্শন করা।
৪. ‘সম্মিলিত পাস’ (Combined Pass) পদ্ধতি চালু করা।
আগামীকালের কর্মসূচি শিক্ষার্থী সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দাবি আদায়ে তারা আগামীকাল ২০ নভেম্বর সকাল থেকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে অবস্থান কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ মিছিল পালন করবেন। আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যৌক্তিক দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
কর্তৃপক্ষ কী বলছে? শিক্ষা বোর্ড বা মন্ত্রণালয় থেকে এখনো সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। এর আগে, ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সিলেবাস সংক্রান্ত জটিলতা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।