কোষ রসায়ন জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশান ২০২৫-২০২৬

কোষ রসায়ন সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর  




১। যে বস্তুকে রাসায়নিকভাবে ভেঙ্গে আর কোনো সরল বস্তু পাওয়া যায় না তা হলো রাসায়নিক মৌল। সকল বস্তু রাসায়নিক মৌল দ্বারা গঠিত।


২। রাসায়নিক মৌল তথা element-এর ক্ষুদ্রতম অংশ যা তার বৈশিষ্ট্য ধরে রাখতে পারে তা হলো পরমাণু বা এটম (atom)।


৩। বস্তুজগতের গঠন একক হলো এটম বা পরমাণু। এটমের কেন্দ্রস্থলে প্রোটন (+) এবং নিউট্রন (০) এক সাথে থাকে। কেন্দ্রের বাইরে (নিউক্লিয়াসের বাইরে) নেগেটিভ চার্জবিশিষ্ট ইলেকট্রন থাকে।


81 এলিমেন্ট বা মৌলের প্রোটন হলো পজিটিভ চার্জবিশিষ্ট এবং ইলেকট্রন হলো নেগেটিভ চার্জবিশিষ্ট।


৫। যৌগ বা কম্পাউন্ড : দুই বা তার অধিক মৌল সুনির্দিষ্ট অনুপাতে সংযুক্ত হয়ে একটি যৌগ বা কম্পাউন্ড গঠন করে। যেমন- পানি (H₂O); দুই অণু হাইড্রোজেন এবং এক অণু অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত।


৬। দু'টি এটমের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত বন্ড হলো আয়নিক বন্ড। যে এটম ইলেকট্রন হারায় তা পজিটিভ চার্জবিশিষ্ট হয়। যে এটম ইলেকট্রন গ্রহণ করে তা নেগেটিভ চার্জবিশিষ্ট হয়।


৭। এটমের চার্জ (+/-) অবস্থাকে আয়ন বলে। উদ্ভিদ আয়ন হিসেবে খনিজ লবণ শোষণ করে থাকে।


৮। দু'টি অণুর মধ্যকার আকর্ষণজনিত আন্তঃঅণু বন্ড হলো হাইড্রোজেন বন্ড।


৯। কার্বন পরমাণুর কাঠামো বিশিষ্ট অণু হলো জৈব অণু।


১০। জৈব অণুর ক্রিয়াশীল (reactive) গ্রুপকে বলা হয় ফাংশনাল গ্রুপ।


১১। জীবদেহের প্রধান প্রধান জৈব অণু হলো কর্বোহাইড্রেট (শর্করা), প্রোটিন (আমিষ), লিপিড (চার্জিত তেল) এবং নিউক্লিক অ্যাসিড।


১২। স্বাদ অনুযায়ী কার্বোহাইড্রেট দু'প্রকার। যথা- শ্যূগার-এরা স্বাদে মিষ্টি, দানাদার এবং পানিতে দ্রবণীয়। যেমন- গ্লুকোজ, সুকরোজ। (ii) নন্ শ্যূগার-এরা স্বাদবিহীন, অদানাদার এবং পানিতে অদ্রবণীয়। যেমন- স্টার্চ, সেলুলোজ।


১৩। গুকোজ ও ফ্রুক্টোজ হলো রিডিউসিং শ্যুগার। কিন্তু গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ মিলিতভাবে গঠন করে সুকরোজ যা রিডিউসিং শ্যুগার নয়।


১৪। সবুজ পাতায় উৎপাদনকৃত কার্বোহাইড্রেট সুকরোজ হিসেবে উদ্ভিদের বিভিন্ন অঙ্গে প্রবাহিত হয়।


১৫। অনেকগুলো মনোস্যাকাইড একত্রে পলিমারভুক্ত হয়ে গঠন করে পলিস্যাকারাইড।


১৬। আলু, গম, ধান, ভুট্টা, যব ইত্যাদির শ্বেতসার-এ (স্টার্চ) শতকরা ২২ ভাগ অ্যামাইলোজ থাকে এবং শতকরা ৭৮ ভাগ অ্যামাইলোপেকটিন থাকে।


১৭। সেলুলোজ উদ্ভিদদেহের প্রধান গাঠনিক উপাদান, তাই সেলুলোজ হলো গাঠনিক পলিস্যাকারাইড।


১৮। অ্যামাইলোজ এর অণু শৃঙ্খল অশাখ কিন্তু অ্যামাইলোপেকটিনের অণু শৃঙ্খল শাখান্বিত।


১৯। গ্লাইকোজেন হলো একটি পুষ্টিজাত পলিস্যাকারাইড, প্রাণিদেহের প্রধান সঞ্চিত খাদ্য, তাই একে প্রাণিজ স্টার্চও বলা হয়।


২০। অ্যামিনো অ্যাসিড হলো জৈব অণু যা প্রোটিনের গাঠনিক উপাদান হিসেবে কাজ করে। কোন জৈব অ্যাসিডের এক বা একাধিক হাইড্রোজেন পরমাণু অ্যামিনো (-NH₂) গ্রুপ দ্বারা প্রতিস্থাপনের ফলে যে অ্যাসিড উৎপন্ন হয় তাকে আমিনো অ্যাসিড বলা হয়।


২১। প্রতিটি অ্যামিনো অ্যাসিডে কমপক্ষে একটি অ্যামিনো গ্রুপ (-NH₂) এবং একটি কার্বোক্সিল গ্রুপ (-COOH) থাকে।


২২। প্রোটিন গঠনকারী অ্যামিনো অ্যাসিড ২০টি।


২৩। অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড ৮টি (শিশুদের জন্য ১০টি)।


২৪। অসংখ্য অ্যামিনো অ্যাসিড দ্বারা গঠিত বৃহদাণুর জৈব রাসায়নিক পদার্থ হলো প্রোটিন বা আমিষ।


২৫। জীবদেহের শুষ্ক ওজনের প্রায় ৫০ ভাগই প্রোটিন।


২৬। সব এনজাইমই প্রোটিন, তবে সব প্রোটিনই এনজাইম নয়।


২৭। কোনো জীবকোষ, জীবটিস্যু বা জীব কর্তৃক উৎপাদিত সকল প্রোটিনের সমষ্টিকে বলা হয় প্রোটিওম।


২৮। আদর্শ প্রোটিন আছে ডিম ও দুধ-এ, তাই ডিম ও দুধ হলো আদর্শ খাবার।


২৯। মানবদেহের জন্য উদ্ভিজ্জ প্রোটিন থেকে প্রাণিজ প্রোটিন অধিক উপযোগী।


৩০। গ্লিসারোল ও ফ্যাটি অ্যাসিডের এস্টারকে লিপিড বলা হয়। তেল এবং চর্বি লিপিডের উদাহরণ।


৩১। লিনোলিক (linoleic) এবং লিনোলেনিক (linolenic) কে বলা হয় অত্যাবশ্যকীয় (essential) ফ্যাটি অ্যাসিড।


৩২। ফ্যাটি অ্যাসিডের ডবল বন্ড-এর একই দিকে দুটি হাইড্রোজেন অবস্থিত থাকলে ফ্যাটি অ্যাসিড। ডবল বন্ড-এর দুই দিকে দুটি হাইড্রোজেন অ্যাসিড। -C=C- H (본본) = তাকে বলা হয় সিজ থাকলে তাকে বলা হয় ট্রান্সফ্যাটি


৩৩। ফ্যাটি অ্যাসিডের মাথার CH₃-এর পর ৩নং কার্বনে ডবল বন্ড থাকলে তাকে বলা হয় ওমেগা-৩ এবং ৬নং কার্বনে ডবল বন্ড থাকলে তাকে বলা হয় ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড।


৩৪। চারটি কার্বন রিং-এর শির দাঁড়ার উপর কার্বনে পার্শ্বশিকল নিয়ে গঠিত লিপিড হলো স্টেরয়েড, কোলেস্টেরল একটি স্টেরয়েড।


৩৫। জীবদেহে যে প্রোটিন (জৈব রাসায়নিক পদার্থ) অল্পমাত্রায় বিদ্যমান থেকে বিভিন্ন বিক্রিয়ার হারকে ত্বরান্বিত করে কিন্তু বিক্রিয়া শেষে নিজেরা অপরিবর্তিত থাকে সেই প্রোটিনই এনজাইম।


৩৬। ঈস্ট কোষ থেকে জাইমেজ এনজাইম আবিষ্কৃত হয় ১৮৯৭ সালে।


৩৭। কোষ থেকে ইউরিয়েজ এনজাইম পৃথক করা হয় ১৯২৬ সালে; পৃথক করেন জ্যাম্স সামনার।


৩৮। কোনো কোনো এনজাইমে প্রোটিন অংশের সাথে একটি অপ্রোটিন অংশ সংযুক্ত থাকে। সংযুক্ত সেই অপ্রোটিন অংশকে প্রোসথেটিক গ্রুপ বলে। প্রোসথেটিক গ্রুপটি কোনো মেটাল হলে সেই মেটাল অংশকে বলা হয় কোফ্যাক্টর।


৩৯। প্রোটিন এবং অপ্রোটিন অংশের সমন্বয়ে গঠিত এনজাইমের প্রোটিন অংশকে বলা হয় অ্যাপোএনজাইম।


৪০। এনজাইমের প্রোসথেটিক গ্রুপ কোনো জৈব রাসায়নিক পদার্থ হলে তাকে কো-এনজাইম বলা হয়।


৪১। চোখের ছানি অপারেশনে ট্রিপসিন এনজাইম ব্যবহার করা হয়।


৪২। রেস্ট্রিকশন এনজাইম দিয়ে DNA অণুর অংশ কাটা হয়, আবার লাইগেজ এনজাইম দিয়ে কাটা DNA খণ্ড জোড়া লাগানো হয়।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url